মুজিববর্ষকে অর্থবহ করতে ফরিদগঞ্জে বছরব্যাপী ‘বঙ্গবন্ধু উৎসব’ সারাদেশে এক ব্যতিক্রমী আয়োজন

ফরিদগঞ্জ ব্যুরো : গাছ যেমন হবে, ফলও তেমনিই হবে’। যিনি পারিবারিকভাবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়া, যাঁর বাবা পাকিস্তানিদের তাবেদারি করবেন না বলে এয়ারফোর্সের সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে দেশ মাতৃকার টানে বাংলাদেশে চলে এসেছেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকের গৌরবময় দায়িত্ব পালন করেছেন, সেই আদর্শিক বাবার সন্তানের পথচলা তো সে আদর্শেই হবে। আর এমন আদর্শিক নেতার মাথা থেকেই আসতে পারে পুরো উপজেলাব্যাপী ‘বঙ্গবন্ধু উৎসব’ নামে একটি কার্যকর ও সময়োপযোগী কার্যক্রমের ধারণা। আর সে ধারণা থেকেই এখন চলছে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে ১৬টি উল্লেখযোগ্য মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু উৎসব।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ফরিদগঞ্জ উপজেলার আপামর জনসাধারণের এমন মন্তব্য বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমানকে নিয়ে। তাঁর বাবা মরহুম অ্যাডঃ সিরাজুল ইসলামের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তিনি তার নিজস্ব চিন্তা চেতনা থেকে যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডগুলো করে যাচ্ছেন, তা সত্যিই সারাদেশের জন্যে দৃষ্টান্তস্বরূপ এবং ব্যতিক্রমী।

২০২০ সাল হচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী। জাতির কাঙ্ক্ষিত এ বছরটিকে সরকার মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই মুজিববর্ষকে সামনে রেখে সরকারি নানা প্রতিষ্ঠান ব্যাপক আকারে নানা ধরনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। আর কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তো মেগা কর্মসূচি থাকবেই। কিন্তু গতানুগতিকতা থেকে বের হয়ে ফরিদগঞ্জে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু উৎসব’ নামে ব্যতিক্রমধর্মী এক কার্যক্রম। ভবিষ্যত বাংলাদেশ যাদের উপর ভর করে চলার স্বপ্ন দেখছে, সেই ভবিষ্যত প্রজন্ম আজকের তরুণ-কিশোর ও কোমলমতি শিশুদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মকে ছড়িয়ে দিতে ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ এবং বি রিলেটেড টু অডিও ভিজ্যুয়াল এডুকেশন (ব্রেইভ)-এর যৌথ উদ্যোগে এই বঙ্গবন্ধু উৎসব শুরু হয়। এর পৃষ্ঠপোষক হচ্ছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয় দিয়ে শুরু হয় এই বঙ্গবন্ধু উৎসব। এ পর্যন্ত ৪/৫টি স্কুলে এ উৎসব হয়ে গেছে। যে প্রতিষ্ঠানগুলোতে বঙ্গবন্ধু উৎসব হচ্ছে সেগুলো হলো : কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়, পাইকপাড়া ইউজি উচ্চ বিদ্যালয়, রূপসা আহমদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, খাজুরিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, ফরিদগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদ্রাসা, ফরিদগঞ্জ এআর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজ, বাসারা উচ্চ বিদ্যালয়, চির্কা চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয়, শহীদ জাভেদ উচ্চ বিদ্যালয়, শোল্লা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কালিরবাজার মিজানুর রহমান স্কুল, রামপুর বাজার মজিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, গৃদকালিন্দিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, চান্দ্রা ইমাম আলী উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ। বছরব্যাপী হবে এ উৎসব। মুজিববর্ষকে ঘিরেই হচ্ছে এই ব্যতিক্রমী আয়োজন। দেখা গেছে যে, যে স্কুলে যেদিন বঙ্গবন্ধু উৎসব হচ্ছে, সে স্কুলের হাজার হাজার শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ, শেখ হাসিনা, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাসহ অসামপ্রদায়িক বাংলাদেশের নানা বিষয় নিয়ে প্রবন্ধ, রচনা, গল্প, কবিতা আবৃত্তি, গান, নৃত্য ইত্যাদি প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে। উপস্থিত সকল শিক্ষার্থীর হাতে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা একটি বুকলেট দেয়া হয়। এসব অনুষ্ঠানে জাহিদুল ইসলাম রোমান নিজে উপস্থিত থাকেন। আরো থাকেন উপজেলার অন্যান্য নেতারা। এমন একটি আয়োজনে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা সচিব মোঃ নূরুল আমিন উপস্থিত ছিলেন। তিনি তো এমন একটি সময়োপযোগী ব্যতিক্রমী আয়োজন দেখে উপজেলা পরিষদ তথা আয়োজকদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।

ফরিদগঞ্জবাসীর মন্তব্য হচ্ছে- যেখানে ক্ষমতাসীন দলের মাঝে হালুয়া রুটির ভাগাভাগি নিয়েই ব্যস্ত থাকার দৃশ্য বিগতদিনে দেখে আসছে জনগণ, সে জায়গায় সম্পূর্ণ দল এবং আদর্শের বিষয়টি মাথায় রেখে এমন একটি ব্যতিক্রমী আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া সত্যিই শুদ্ধ এবং আদর্শিক রাজনীতি চর্চার পরিচয় বহন করে। আমরা ফরিদগঞ্জবাসী তারুণ্যের প্রতীক এবং আদর্শবান নেতা অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমানের রাজনৈতিক ভবিষ্যত উজ্জ্বল এবং সফলতা কামনা করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *