ফরিদগঞ্জে পিতার বিরুদ্ধে মৃত সন্তানের সংবাদ সম্মেলন!

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি:
ফরিদগঞ্জে জন্মদাতা পিতার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করলেন বিদেশ ফেরত মৃত সন্তান (!)। অন্যদিকে সেই মৃত সন্তানের দায়ের করা মামলায়ই বর্তমানে কারারুদ্ধ পিতা। পিতার বিরুদ্ধে কেন মামলা দায়ের করতে বাধ্য হলেন, সেই বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতেই শনিবার (২০ নভেম্বর) সকালে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ছেলে প্রবাসী এমরান হোসেন জহির প্রকাশ ঝুটন।


সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমরান হোসেন জহির প্রকাশ ঝুটন জানান, তিনি তার পিতা আহাম্মদ উল্যা বেপারী প্রথম স্ত্রী খুরশিদা বেগমের ছেলে। এই ঘরে তার আরেক বোন খাদিজা বেগম লাকি বর্তমানে যিনি মৃত। আমার পিতা আমার মায়ের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার পরে দ্বিতীয় বিয়ে করে এবং সেই ঘরে সৎ মা এবং তিন বোন রয়েছেন।

জন্মের পর থেকে আমি পিতার আদর ¯েœহ ভালবাসা থেকে বঞ্চিত হলেও জীবিকার টানে প্রবাসে যাওয়ার পর থেকে পিতার সার্বক্ষনিক দেখভাল করেছি। তাকে ভরনপোষন বাবদ টাকা এবং সৎবোনের বিয়ে এবং বাবার চোখের অপারেশনের জন্য টাকা
পাঠিয়েছি।

কিন্তু আমার সেই জন্মদাতা বাবা আমাকে মৃত দেখিয়ে গত ০৮ আগস্ট ২০১০ তারিখে আমাদের স্থানীয় ১১নং চরদুঃখিয়া পুর্ব ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে তৎকালিন চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ পাটওয়ারী ও সচিবের স্বাক্ষরে নিজের নামে আমাকে মৃত দেখিয়ে ওয়ারিশ সনদ গ্রহণ করেন। একই তারিখে তিনি আমার
বোন খাদিজা বেগম লাকির মৃত্যু সনদ দেখিয়ে নিজেকে একক ওয়ারিশি দেখিয়ে ওয়ারিশ সনদ গ্রহণ করেন। ফলে আমি আজ আপনাদের সামনে দাড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন করলেও আমার পিতার কাছে আমি মৃত। জন্মদাতা পিতা হয়ে তিনি কিভাবে শুধুমাত্র সম্পত্তির লোভে নিজের ঔরসজাত সন্তানকে মৃত দেখালেন।

শুধু তাই নয়, তিনি তার পিতার একমাত্র সন্তান দাবী করে তথা আমার ৫(পাঁচ) ফুফুর অস্তিত্ব অস্বীকার করে গত ২৭ অক্টোবর ২০১০ তারিখে একই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একই চেয়ারম্যানের নিকট থেকে ওয়ারিশ সনদ গ্রহণ করেন। জাল জালিয়াতির এমন নজির আমি অদ্যবদি দেখিনি।


আমি প্রবাস থেকে গত দেড় মাস পুর্বে দেশে ফিরে আসার পর আমার ফুফু কর্তৃক আমাকে দান করা ও আরেক ফুফু থেকে ক্রয়কৃত জমিতে বাড়ি নির্মাণ করতে গেলে বাঁধার সম্মুখিন হই। এক পর্যায়ে এর কারণ জানতে গিয়ে বাবার এসব কু-কর্মের কথা জানতে পারি। এলাকায় এই বিষয়ে কয়েকবার আমাদের স্থানীয়
ভাবে শালিশী হলেও কোন সুরাহা না হওয়ায়, আমি বাধ্য হয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) চাঁদপুর আদালতে অভিযোগ করি। পরে

আদালতের নির্দেশে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে বৃহষ্পতিবার রাতেই আমার পিতাকে আটক করে । পরদিন শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) পুলিশ তাকে আদালতে পাঠালে আদালত আমার বাবাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।

প্রেসক্লাব সভাপতি মো. কামরুজ্জামান’র সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে এসময় এমরান হোসেন জহির প্রকাশ ঝুটনের মা খুরশিদা বেগম, স্ত্রী মুক্তা আক্তার, ফুফাতো বোন সরলা বেগম, ফুফাতো ভাই জাহাঙ্গীর আলম, সেলিম পাটওয়ারী, দেলোয়ার হোসেন এবং এলাকাবাসীর পক্ষে সোহেল ঢালী ও সামছুল
আরেফিন মুকুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *