
আমান উল্লাহ খাঁন ফারাবী:
ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৭নং পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের ২নং ও ৩নং ওয়ার্ডের প্রধান সড়ক এটি, সড়কটি কড়ৈতলী বাজার হতে পাটোয়ারী বাজার অভিমুখী একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক।
এক কিলোমিটার এই জনগুরুত্বপূর্ণ কাঁচা সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন ৩টি মাদ্রাসার, ৩টি উচ্চ বিদ্যালয় ও ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করে, প্রতিদিন তিন থেকে চারটি বাজারে যাতায়াতকরে অর্ধশত ব্যবসায়ী। এছাড়াও ক্রেতা ও বিক্রেতাসহ এলাকার ৫টি গ্রামের হাজারো মানুষের চলাচলের একমাত্র এই জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটির বর্তমান বেহাল দশা জনদুর্ভোগ চরমে।
এক কিলোমিটার দীর্ঘ এই কাঁচা সড়কটি পাকাকরণের দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এর উন্নয়নে নজর না দেয়ায় রাস্তাটি এখন পথচারীদের নিত্যদিনের চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় যে, প্রতিদিন জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি দিয়ে ওই এলাকার ছাত্র-ছাত্রীরা কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়, কড়ৈতলী আলীম মাদ্রাসা, পাইকপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়, সাছিয়াখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাছিয়াখালী মাদ্রাসা, উত্তর শাশীয়ালী উচ্চ বিদ্যালয়, উত্তর শাশীয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ শাশিয়ালী এম এ বারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ আরো কয়েকটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের চলাচলের একমাত্র সড়ক এটি। এছাড়া ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু ডিগ্রী কলেজ চান্দ্রা কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের প্রধান সড়ক এই সড়কটি এবং পাটোয়ারী বাজার, কড়ৈতলী বাজার ও শাহী বাজার সহ কয়েকটি বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতা সহ অত্র অঞ্চলের প্রায় ৫টি গ্রামের মানুষ চলাচলের একমাত্র প্রধান মাধ্যম এই সড়কটি। কিন্তু সামান্য বৃষ্টি হলেই জনবহুল এই সড়কটি কাদা এবং গর্তের কারণে যানবাহন তো দুরের কথা পায়ে হেঁটে মানুষের চলাচল কঠিন হয়ে পড়ে।
বিশেষ করে এই অঞ্চলের মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে, এবং প্রেগনেন্সি কারণে কোন রোগীকে ফরিদগঞ্জ কিংবা চাঁদপুরে অথবা যে কোন হসপিটালে নিতে এই সড়কটি ব্যাপক বিপদসংকুল হয়ে পড়ে।
কড়ৈতলী বাজার হতে পাটোয়ারী বাজার অভিমুখী এই সড়কটি প্রধান, কিন্তু অন্য পাকা রাস্তা হয়ে ঘুরে যেতে কড়ৈতলী বাজার থেকে পাটোয়ারী বাজার যেতে প্রায় ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার দূর দিয়ে ঘুরে যেতে হয়। যেখানে প্রায় আধা ঘন্টার মত সময় ব্যয় হয়। অথচ এই রাস্তাটি পাকা করে দিলে অনায়াসে মাত্র কয়েক মিনিটে এক কিলোমিটার সড়ক দিয়ে কড়ৈতলী বাজার হতে পাটওয়ারী বাজার যাওয়া সম্বভ।
একই সাথে উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় না।
এব্যাপারে ২নং ওয়ার্ডে অবস্থিত দক্ষিণ ওই এলাকায় সরাসরি গেলে,
এলাকাবাসিরা বলেন, তাদের ধারণা, তারা মনে হয় অত্র ইউনিয়নের অথবা ফরিদগঞ্জের কোন বাসিন্দা নন, কারণ জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটির উন্নয়নে কখনো কোনো চেয়ারম্যান এবং মেম্বার রাস্তাটি সংস্কারের জন্য কোনো উদ্যোগ নেয়নি। শুধু ভোটের সময় ঘনিয়ে আসলে রাস্তাটি পাকা করার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে রাস্তাটি করে দেওয়ার আশ্বাস শোনা যায়। কিন্তু ভোট চলে গেলে পরে আর কিছুই হচ্ছে না।
দেশের বিভিন্ন স্থানে, বিভিন্ন জায়গায় জনগুরুত্বপূর্ণ হীন অনেক স্থানে খামোখা পাকা সড়ক নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। এবং প্রধান সড়ক থেকে বাড়িতে যাওয়ার সড়কটিও পাকা করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটির কোন উন্নয়ন হচ্ছে না। ওই এলাকার দক্ষিণ শাশিয়ালী এম এ বারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাসলিমা আক্তার এবং সাছিয়াখালী মাদ্রাসার শিক্ষক আমান উল্লাহ খাঁন ফারাবী বলেন জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির বেহাল দশার কারণে, প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসতে খুব কষ্ট হয়। রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন আমাদের বিদ্যালয় ছাড়াও আরো ৭ থেকে ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এবং কয়েকটি বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতা এবং অত্র অঞ্চলের হাজারো মানুষ এই কাদার মধ্যে দিয়ে হেঁটে চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
ওই এলাকার আনছার বিডিপির কমান্ডার রিফক কমান্ডার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক বলেন, এই সড়ক পাকা করনের জন্য বহু রাজনৈতিক নেতাকর্মী কাছে গিয়েছি, সবাই আশ্বাস দিয়েই গেছে, এছাড়াও উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে যোগাযোগ করেছি এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির পাকা করনের জন্য কোন সাড়া পাইনি। আমারা সবসময় আশ্বাস পেয়ে যাচ্ছি, কিন্তু বাস্তবে কোন রূপ দেখি না। তারা আরো বলেন, এই এলাকায় আরো ৪জন বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার রয়েছে, তাদের কথা ও এই এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের কথা চিন্তা করে এমপি মহোদয় ও উপজেলা চেয়ারম্যান এই সড়কটি মেরামত করার বিশেষ আবেদন যানাচ্ছি।
অত্র অঞ্চলের বয়োবৃদ্ধরা জানান কড়ৈতলী বাজার হতে পাটোয়ারী বাজার অভিমুখী এই কাঁচা রাস্তাটি সেই পাকিস্তান আমল থেকে একটি জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। কিন্তু আশানুরূপ উন্নয়নের ছোঁয়া না লাগায় রাস্তাটির বেহাল অবস্থার আজও উন্নয়ন হয়নি। কর্তৃপক্ষ রাস্তাটির জনগুরুত্বপূর্ণতা যাচাই করে তড়িৎ ব্যবস্থা নেবেন বলে সকলের বিশ্বাস।
এবিষয়ে চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলতে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি, এবং তার মুঠোফোনে কল করা হলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
বার্তা প্রেরক