নারায়ন রবিদাস:
কলেজে অধ্যয়নরত থাকাবস্থায় উপবৃত্তির টাকা প্রতিমাসে কতো পেতো তার পরিমান, নাম, রোল নং, শাখা, পিতা ও মাতার নামসহ তার ঠিকানা সবকিছুই বলার পর শিক্ষার্থীর বিশ^াস স্থাপনের চেষ্টা। অত:পর আলাপচারিতার একপর্যায়ে একটি কোড নাম্বার দিয়ে বিকাশ এজেন্টের কাছে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে কৌশলে কোড নাম্বারটির সমপরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে যায়। এভাবে কলেজ পড়–য়া উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মুঠো ফোনের মাধ্যমে প্রতারণার এক নতুন কৌশল শুরু হয়েছে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে। এক শিক্ষার্থী চক্রটির প্রতারণার ফাঁদে পড়ে খুইয়েছে ৬৬ হাজার ৩ শত টাকা।
এভাবে ফরিদগঞ্জে উপবৃত্তির টাকা প্রদানের নামে অভিনব কায়দায় কলেজ শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে। ৬৬ হাজার ৩ শত টাকা প্রদানকারী শিক্ষার্থী প্রথম তিনবারে বুঝতে না পারলেও চতুর্থবার ২৫ হাজার ৩শত টাকা পাঠানোর জন্য পুনরায় বিকাশ এজেন্টের দোকানে গেলে ঘটনাটি ধরা পড়ে। ফরিদগঞ্জ পৌরসভা সদরস্থ কাছিয়াড়া গ্রামে এঘটনাটি ঘটে। এব্যাপারে ২৬ আগস্ট ঐ শিক্ষার্থীর মামা পরেশ চন্দ্র দাস ফরিদগঞ্জ থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেছে।
ওই চক্রের কাছ থেকে কল পেয়েছেন এমন অমৃত কুমার পালসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, তাকেসহ আরো ৪/৫জন শিক্ষার্থীকে একই রকম ভাবে প্রতারনার ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেছিলো চক্রটি। ঐসব শিক্ষার্থীরা সচেতন হওয়ায় চক্রটি সফল হতে পারেনি।
চাঁদপুর সরকারি কলেজে অনার্স প্রথমবর্ষে অধ্যয়নরত পপি রানী দাস নামের ঐ শিক্ষার্থীটি জানায়, ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজে অধ্যয়নরত থাকাবস্থায় উপবৃত্তির টাকা পেতো সে। গত বুধবার তার মামার ব্যবহৃত মুঠো ফোনে অপর তিনটি মোবাইল নং যথাক্রমে ০১৮৯৩৫৩০৪৮১/ ০১৮১৮৯৫০২১৭/০১৮৭১৮৪০৮৬৩ থেকে কল দিয়ে ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজে অধ্যয়নরত থাকাবস্থায় উপবৃত্তির টাকা প্রতিমাসে কতো পেতো তার পরিমান, নাম, রোল নং, শাখা, পিতা ও মাতার নামসহ তার ঠিকানা বলে বুঝানোর চেষ্টা করে। তোমাকে প্রতিমাসে যে পরিমাণ টাকা উপবৃত্তি দেয়ার কথা ছিলো তার থেকে অনেক কম দেয়া হয়েছে। তুমিতো আরো অনেক টাকা পাবে। তাই তুমি তোমার পরিচিত কোনো একটি বিকাশ এজেন্টের নাম্বার দাও। পরে বলে তোমার এরিয়া কোড নাম্বার কতো তুমি কি জানো ? শিক্ষার্থীটি না সূচক জবাব দেয়ার পর জানায় তোমার কোড নাম্বার ওয়ান ফাইভ থ্রি ডাবল জিরো অর্থাৎ ১৫৩০০। তুমি এক কাজ করো, তোমার পরিচিত একটি বিকাশ এজেন্টের দোকানে গিয়ে বলবে টাকা পাঠানো যাবে কিনা! যদি যায়, তাহলে বলবে আমি এক আত্মীয়ের কাছে কিছু টাকা পাঠাবো। যদি জানতে চায় কতো টাকা, তাহলে তুমি বলবে ১৫৩০০। তবে মনে রেখো, তোমার কোড নাম্বারটি বিকাশ এজেন্টের দোকানিকে বুঝতে দিবেনা। এভাবেই সহজ সরল শিক্ষার্থীটি প্রতারকের খপ্পরে পড়ে ৬৬ হাজার ৩ শত টাকা খ্ইুঁয়েছে।
এব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রকিব জানান, প্রতারণার ঘটনায় জিডি অনুযায়ী তদন্ত চলছে। তবে শিক্ষার্থীদের এই ধরনের কোন প্রতারকের খপ্পরে পড়ার পুর্বে অবশ্যই থানা পুলিশ বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।