প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার বলেছেন, শিক্ষকরা তাদের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের নামে ভুল পথে চালিত করতে উসকানিমূলক কার্যক্রম বন্ধ না করলে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরকার তহবিল সরবরাহ বন্ধ করে দেবে।
তিনি বলেন, ‘সরকার অর্থায়ন বন্ধ করে দেবে…সরকার কেন অর্থায়ন করবে? এগুলো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এখন আপনাদেরই চিন্তা করতে হবে, কী করবেন আপনারা?’
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় শ্রমিক লীগের ১৩তম সম্মেলনে বক্তব্য প্রদানকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
উসকানিমূলক এবং কুৎসিত কথার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভুল পথে নিয়ে যাওয়া কেউ কখনই মেনে নেবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যদি এটি হয়ে যায় (আপনার) তাহলে আপনাকে নিজস্ব তহবিলের সন্ধান করতে হবে, আপনার নিজের বেতনের ব্যবস্থা নিজেকেই করতে হবে। পড়াশোনার জন্য নিজের ব্যয় নিজেকেই বহন করতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, সরকার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তহবিল বরাদ্দ করায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা তাদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন।
‘পৃথিবীর কোনো দেশে এত কম ব্যয়ে উচ্চশিক্ষা দেয় না… এটি সত্য যে (বিশ্ববিদ্যালয়ে) স্বায়ত্তশাসন আছে, কিন্তু কে অর্থ প্রদান করছে? সরকার করছে,’ যোগ করেন তিনি।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি সরকারই প্রদান করে বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, একজন (সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের) শিক্ষার্থী তার পড়াশোনায় এক বছরে কত ব্যয় করেন? এটি বেশি হলে ১৫০ টাকা! এ ক্ষুদ্র অঙ্কের অর্থে উচ্চতর শিক্ষা পাওয়া সম্ভব?
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীকে প্রতি সেমিস্টারে কত ফি দিতে হয় যেয়ে দেখুন। ‘প্রতিটি (সরকারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর জন্য সরকার দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা ব্যয় করে… প্রকৌশল ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য এর পরিমাণ আরও বেশি। সব অর্থ সরকার থেকে আসে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শৃঙ্খলা থাকতে হবে। শিক্ষার্থীদের অবশ্যই যথাযথ পাঠ গ্রহণ করতে হবে এবং তাদের জীবনকে আরও উন্নত উপায়ে গড়ে তুলতে হবে।
‘সত্যিকার অর্থেই আমরা এমনটা চাই। কিন্তু কিছু লোককে বলতে দেখি যে আমরা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বুঝতে পারি না। যেন তারাই কেবল এটি বুঝতে পারে এবং তারাই বিশৃঙ্খলা করে।’
এ ধরনের লোকজনই দিনের পর দিন শিক্ষা কার্যক্রম ধ্বংস করে শিক্ষার্থীদের কর্মঘণ্টা নষ্ট করছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সব অর্থ সরকার থেকে দেয়া হয়। সব উন্নয়ন কাজ সরকার করে এবং এ ধরনের লোক তা ব্যবহার করে আনন্দ পাবে এবং সরকার কোনো পদক্ষেপ নেবে না… এটা হতে পারে না। একটা প্রবাদ আছে স্বাধীনতা ভালো, কিন্তু তা ছেলেদের জন্য না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতেই পারে। আইন অনুযায়ী যিনি অভিযোগ করবেন, তাকে তা প্রমাণ দিতে হবে।
যে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আইন অনুযায়ী অভিযোগ যে উত্থাপন করেন তা প্রমাণ করা তার নিজের দায়িত্ব এবং যদি সেই ব্যক্তি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন তবে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।’