ফরিদগঞ্জে অপহরণ করে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ : সালিশের নামে ষ্ট্যাম্পে আদায় ও বেত্রাঘাতের অভিযোগ।

 ফরিদগঞ্জ(চাঁদপুর)প্রতিনিধি : ফরিদগঞ্জে ৬ষ্ঠ শ্রেণির স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ করে লঞ্চযোগে ঢাকা নেয়ার পথে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে ধর্ষণের পর তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে দেয়ার পর স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ লোকজন সালিশের কথা বলে ওই ছাত্রীর কাছ থেকে ৫টি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার পর উল্টো দোষী বলে তাকে বেত্রাঘাত করার ঘটনা ঘটেছে। এব্যাপারে ঘটনার ৬দিন পর থানায় মামলা দায়ের করে ওই ছাত্রীর মা। পরে তাকে ডাক্তারি পরীক্ষার সম্পন্ন হওয়ার পর আদালতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে মেয়েটি ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
থানায় দায়েরকৃত মামলা ও আদালতে দেয়া জবানবন্দি অনুযায়ী জানা গেছে, বালিথুবার আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সারা(১৪)(ছদ্ম নাম)’র সাথে একই এলাকার থাই এলমুনিয়ামের মিস্ত্রি ফারুক উকিল (২৪) সাথে সর্ম্পক ছিল। গত ৩০ অক্টোবর সে স্কুলে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হলে ফারুক সিএনজি স্কুটার নিয়ে পথে দাঁড়ায়। ফারুক তাকে চাঁদপুর যাওয়ার জন্য বললে সে রাজী হয়নি। পরে তাকে জোর পুর্বক গাড়ীতে উঠিয়ে লঞ্চ যোগে ঢাকা নিয়ে যায়। লঞ্চে কেবিনে অবস্থান করার সময় ছাত্রীরে আপত্তি সত্তে¡ও দুই বার জোর পুর্বক ধর্ষণ করে ফারুক। পরে ঢাকায় গিয়ে পুনরায় আরেকটি লঞ্চ যোগে তাকে নিয়ে চাঁদপুর আসে । এদিকে এলাকায় আসার পর স্থানীয় প্রভাবশালী লোকজন বিয়ে পড়িয়ে দেয়া ও সালিশের মাধ্যমে সুরাহার কথা বলে স্থানীয় ইউপি সদস্য হারিছ মেম্বার, মহসীন তপাদারসহ লোকজন ওই ছাত্রীর কাছ থেকে ৫টি ননজুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখে । একই সাথে হারিছ মেম্বারের নির্দেশে ছাত্রীটিকে বেত্রাঘাত করা হয় বলে মামলার বাদী মেয়েটির মা জানায়।
এদিকে ঘটনার ৬দিন পর গত ৪ নভেম্বর ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ফারুক উকিলকে প্রধান অভিযুক্ত করে ফরিদগঞ্জ লিখিত অভিযোগ করে। পুলিশ ঘটনাটি আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে গ্রহণ করে পরদিন ৫ নভেম্বর ডাক্তারি পরীক্ষার জর‌্য হাসপাতালে প্রেরণ করে। এছাড়া চাঁদপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ হাসান জামানের আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় সারা (ছদ্মনাম) জবানবন্দি প্রদান করে।


স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এইচ এম হারুন জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য তাকে ফোনে ছেলে মেয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার কথা জানায়। আমি তাকে বলেছি যদি পুলিশী বিষয় হয় তাহলে পুলিশে খবর দিতে । আর যদি স্থানীয় ভাবে মিমাংসার বিষয় হয়, তাহলে সাদা কাগজে উভয়ের অভিভাবকের স্বাক্ষর রেখে তাদের জিম্মায় ছেলে মেয়েকে হস্তান্তর করে পরবর্তীতে উভয় পক্ষের সম্মতিতে বৈঠকের আয়োজনের জন্য। কিন্তু ধর্ষণসহ অন্যবিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নাজমুল হোসেন বুধবার দুপুরে জানান, মামলা দায়েরের পর অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চলছে। ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা ও ২২ ধারায় আদালতে জবানবন্দি সম্পন্ন হয়েছে।
থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রকিব জানান, ধর্ষণের ঘটনায় সালিশের কোন সুযোগ নেই। কিন্তু সালিশের নামে কাল ক্ষেপন , স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর আদায় ও বেত্রাঘাতের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। যা অপরাধ । মামলার তদন্ত চলছে। #

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *