ফরিদগঞ্জ এ আর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে কতিপয় শিক্ষকদের কান্ড !পরীক্ষার দাবীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ফরিদগঞ্জ ব্যুরো: ফরিদগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী এ আর মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষকদের বিভিন্ন স্বার্থ বা ব্যক্তিগত সর্ম্পকের কারণে বিদ্যালয়টির সুনাম নষ্ট হতে বসেছে। স্কুল খাতের মাত্র কয়েক মাসের বেতন না পাওয়াকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বন্ধ করতে তারা দ্বিধা করেনি। গতকাল সোমবার বিদ্যালয়টির ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ধর্ম ও ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের আইসিটি বিষয়ে পরীক্ষার নির্ধারিত সময় ছিল দুপুর ২ টায়। কিন্তু কয়েজন শিক্ষক তাদের বেতনের অজুহাতে পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে শিক্ষকদের হাত থেকে খাতা ও প্রশ্ন কেড়ে নিয়ে যায়। পরে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপে প্রায় দেড় ঘন্টা পর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের শ্রেণী শিক্ষা, পরীক্ষা ও স্কুল নিয়ে একটি গোষ্ঠির নানা অপতৎপরতায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
গতকাল সোমবার বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের শত শত শিক্ষার্থী পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে বের হয়ে মাঠে বিক্ষোভ মিছিল করছে। পুরোনো ভবনের দ্বিতীয় তলায় গিয়ে, দেখা যায়, শিক্ষকবৃন্দ তাদের মিলনায়তনের বসে পরীক্ষা নেওয়া না নেওয়া নিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়েছে। সহকারী প্রধান শিক্ষক গ্লাস ঘেরা রুমে বসে কাজ করছেন। এই ফাঁকে বেতন পাওয়ার দাবীর এক শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের অফিস রুমের কলাপসিবল গেইটে তালা মেরে দিয়েছেন। এর মধ্যে সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত হলে তারা তাদের কথা বন্ধ করে দেন। কি কারণে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বন্ধ এমন প্রশ্ন সহকারী প্রধান শিক্ষক হাসিনা আক্তারকে করলে তিনি বলেন, আমি কিছু জানি না। পরে, সককারী শিক্ষক জাকির হোসেন পাটওয়ারী, সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বেতন পাচ্ছি না তার দাবীতে পরীক্ষা বন্ধ করা হয়েছে। তিনি বলেন- অন্যায় ভাবে আমাদের দীর্ঘ ৯ মাসের বেতন দিচ্ছে না প্রধান শিক্ষক। তাই আমরা সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি বেতন না দেওয়া পর্যন্ত আমরা কোন পরীক্ষা নিবো না। এক পর্যায় সাংবাদিকদের অনুরোধে তিনি প্রধান শিক্ষককের গেইটের তালা খুলে দেন। পরে প্রধান শিক্ষক রফিকুল আমিন কাজল এসে সাংবাদিকদের এই বিষয় কথা বলার সময় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তার সাথে কয়েকজন থানা পুলিশ নিয়ে উপস্থিত হন এবং নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড় ঘন্টা পর পরীক্ষ শুরু করে।
এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষক রফিকুল আমিন কাজল বলেন- প্রতিষ্ঠানটি সরকারী করণে ফলে, শিক্ষার্থীদের মাসেক বেতন কমানোয় হয়। যার ফলে বিদ্যালয়ের আয় অর্ধেকে নেমে আসে। এতে করে পূর্বে শিক্ষকদের সরকারী বেতনের বাহিরে যে পরিমান স্কুল থেকে বেতন দেওয়া হতো তা আর এখন দেওয়া সম্ভব না। যার ফলে, বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়, শিক্ষকদের বেতনের একটি কাঠামো তৈরি করে দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী আমি তাদের বেতন দিয়ে আসছি। আর্থিক সংকটের কারণে কয়েক মাস বন্ধ থাকলেও তা পরিশোধের প্রায় পরিশোধ। তাছাড়া শিক্ষকদের স্কুলখাত থেকে বেতন অংশ ভাড়ানোর জন্য আমি গত শনিবার একটি কমিটি করে দেই। তারা সভাপতি ছুটি শেষে কর্মস্থালে আসলে তার ¯^াক্ষর নিয়ে সবার বেতন প্রদানেরও সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণে সহকারী শিক্ষক জাকির হোসেনসহ কয়েকজন শিক্ষক আজকের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। আমার মনে হচ্ছে অন্য একটি চক্র বিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করার পাঁয়তারা করছে।
উপজিলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহ আলী রেজা আশরাফী বলেন, শিক্ষর্থীদের পরীক্ষা বন্ধ এমন সংবাদ পেয়ে আমি এসেছি। কি কারণে তারা পরীক্ষা বন্ধ করেছে, তা আমরা পরে দেখবো। এখন পরীক্ষা শুরু করে দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *