সুনির্দিষ্ট অভিযোগে কাউন্সিলর রাজীব গ্রেফতার: র‍্যাব

ঢাকা ব্যুরো : সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা তারেকুজ্জামান রাজীবকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। শনিবার (২০ অক্টোবর) দিনগত রাত ১টায় বসুন্ধরার সি ব্লকের আবতাব উদ্দিন রোডের ৪০৪ নম্বর বাসা থেকে রাজীবকে গ্রেফতার শেষে এ কথা জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম। সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কাউন্সিলর রাজীবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা আজ ৯টার দিকে জানতে পারি, রাজীব বসুন্ধরায় তার বন্ধুর বাসায় আত্মগোপন করে আছেন। সেই তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো হল সন্ত্রাসবাদ, চাঁদাবাজি এবং দখলদারিত্ব।

তিনি আরও বলেন, অভিযানে বাসা থেকে বিদেশি মদের সাতটি বোতল, একটি অবৈধ পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, তিন রাউন্ড গুলি, নগদ ৩৩ হাজার টাকা ও একটি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়। রাজীব অস্ত্রের কোনও কাগজপত্র আমাদের দেখাতে পারেননি, এটি অবৈধ অস্ত্র। রাজীব এই বাসায় কত দিন ধরে আত্মগোপনে ছিলেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের জানা মতে ১৩ অক্টোবর থেকে তিনি এই বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন। তার বন্ধুকে আমরা পাইনি সে বিদেশে রয়েছে। তার বিরুদ্ধে কয়টি মামলা ও দখলদারিত্বের কি অভিযোগ রয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা মাত্র অভিযান এখানে শেষ করেছি। বিষয়গুলো আমরা খতিয়ে দেখছি।

রাজীবের কাছ থেকে পাসপোর্ট পাওয়া গেছে, তার মানে তিনি কি পালাতে চেয়েছিলেন, এমন প্রশ্নের জবাবে সারোয়ার বিন কাশেম জানান, আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। সূত্র জানায়, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের মধ্যেই সিটি করপোরেশন এলাকার কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে দখল, চাঁদাবাজি করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। কাউন্সিলরদের কেউ কেউ সরাসরি ক্যাসিনো কারবারের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। অভিযানের পরপরই অনেকেই পালিয়ে দেশ ছেড়ে গেছেন। মোহাম্মদপুরের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবও গত দুই সপ্তাহ ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। র‌্যাব সদর দফতর ও র‌্যাব-২ এর একটি যৌথ দল তাকে নজরদারি করে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, টং দোকানদার থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ, চন্দ্রিমা হাউজিং, সাত মসজিদ হাউজিং, ঢাকা উদ্যানসহ বিভিন্ন এলাকায় দখলবাজি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে রাজীবের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে প্রবাসীদের বাসাসহ এলাকার অনেকের জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে। বর্তমানে মোহাম্মদপুর এলাকায় তার একাধিক বাড়ি, জমি ও একাধিক বিলাসবহুল গাড়ির মালিক তিনি। সাবেক একজন প্রতিমন্ত্রীর হাত ধরে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হওয়া রাজীব ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কাউন্সিলর পদে জয়লাভ করেন। এরপর থেকেই মূলত ভাগ্য আরও খুলে যায় তার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *