
মামুন হোসাইনঃ
ফরিদগঞ্জে আলোচিত ফরিদ উদ্দিন (২৫) হত্যা হত্যাকান্ড রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় নিহতের প্রতিবেশি সালাউদ্দিন ও রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান তিনি। পুলিশ সুপার বলেন, আইপিএল খেলা দেখছিলেন ফরিদ। তখন তার কাছে থাকা ১০ হাজার টাকা দেখতে পায় প্রতিবেশি সালাউদ্দিন। আর সেই টাকার লোভ এবং সালাউদ্দিনের বৌয়ের সাথে পরকীয়া সম্পর্কের জেরে বোটি দা’ দিয়ে ফরিদকে কুপিয়ে মেরে ফেলে সালাউদ্দিন ও রহমান নামে ২ জন। আমরা দুজনকেই গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। খুনে ব্যবহৃত বোটি দা আমরা উদ্ধার করতে পেরেছি। তাদের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
গত ১৫ এপ্রিল রাতে ফরিদগঞ্জের ১৬ নং রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম কাউনিয়া ভূঁইয়া বাড়ী থেকে ফরিদ উদ্দিন ভূঁইয়ার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ঘটনাস্থলে সিআইডি, পিবিআই, গোয়েন্দা পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থা একত্রিত হয়ে তদন্ত শুরু করে থানা পুলিশ। পরদিন ১৬ এপ্রিল মৃত ফরিদ উদ্দিনের ভগ্নিপতি দুলাল চৌধুরী বাদি হয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় ১টি মামলা করেন। মামলা নং-২৩/২২। আর সেই মৃত্যুর রহস্যই উদঘাটন করে ২ জনকে গ্রেফতার করে প্রেস ব্রিফিং করে পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ।
তদন্ত চলাকালীন তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায়। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে হত্যাকারীকে শনাক্ত করা হয়। পরে সালাউদ্দিন কে নিজ গ্রাম ফরিদগঞ্জ ও তার আরেক সহযোগী রহমানকে ঢাকা গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যমতে হত্যা কান্ডের শিকার ফরিদ উদ্দিনের মানিব্যাগ ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত বোটি দাসহ সংশ্লিষ্ট আলামত উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, ফরিদ উদ্দিন গত কয়েকমাস পূর্বে সড়ক দূর্ঘটনার শিকার হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন, সেই থেকে তিনি বাড়ীতে বসবাস করতেন, সালাউদ্দিন প্রতিবেশি হওয়ায় তার সাথে সক্ষতা গড়ে তোলেন ফরিদ উদ্দিন। সেই থেকে তারা এক সাথে চলাফেরা করতেন, এক সাথে চলাফেরার সুবাদে তারা ঘটনার পূর্বে বাড়ির পাশের একটি দোকানে মোবাইল ফোনে গেইম খেলার সময় ফরিদ উদ্দিনের মানিব্যাগে নতুন টাকা দেখতে পায় সালাউদ্দিন। এই ১০ হাজার টাকার লোভ আর সালাউদ্দিনের স্ত্রীর সাথে ফরিদ উদ্দিনের পরকীয়া সন্দেহে এ খুনের ঘটনা ঘটানো হয় বলে জানিয়েছেন পুলিম।
এসময় চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ফরিদগঞ্জ-হাজীগঞ্জ সার্কেল) সোহেল মাহমুদ এবং ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহীদ হোসেনসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।