ফরিদগঞ্জে স্কাউট টিচার হিতেশ শর্মার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার:
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ স্কাউটের সাবেক উপজেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক ও মেঘনার পাড় মুক্ত স্কাউটের সাধারন সম্পাদক কর্তৃক স্কাউট লিডার হিতেশ শর্মার বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। ওই শিক্ষার্থী বিচার চেয়ে উপজেলা কমিটির কমিশনার, মেঘনার পাড় মুক্ত স্কাউটের সভাপতি ও সাবেক মেয়র মাহাফুজুল হকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রায় দুই মাস পার হলেও বিচার পায়নি ভূক্তভুগি শিক্ষার্থী। এতে ক্ষুব্ধ সকল স্কাউট শিক্ষার্থী বৃন্দ। অভিযোগের পরেও কেন ঐ শিক্ষকের বিচার হয়নি এমন দাবি শিক্ষার্থীদের। নাকি কোন অপশক্তির ভয়ে চুপ তারা। এমন প্রশ্ন তাদের মাঝে।
ঘটনার সূত্র ধরে জানাযায়, গত বছর ১৭ই ডিসেম্বর থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফরিদগঞ্জ উপজেলার পি.এল কোর্সের আয়োজন হয় গাজীপুর মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে। ৫ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন ৪২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থী। ৫দিনের অনুষ্ঠানটি শেষ হয় ৪ দিনে। গত ১৯শে ডিসেম্বর দিবাগত রাতে আনুমানিক ১০টার সময় একজন স্কাউট লিডার সেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন কালে ঐ শিক্ষার্থীকে ডেকে তার রুমে নেয় উপজেলা মেঘনার পাড় মুক্ত স্কাউটের সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা স্কাউটের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারন সম্পাদক হিতেশ শর্মা।
এসময় হিতেশ শর্মা ঐ শিক্ষার্থীর সাথে জোর পূর্বক যৌন হয়রানির চেষ্টা করলে মেয়েটি দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে দিন সকালে মেয়েটি ঘটনাটি স্কুলে স্কাউট টিচার ও অত্র বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক মহিউদ্দিনের কাছে বলেন। শিক্ষক মহিউদ্দিন অনুষ্ঠানের পরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন। কিন্তু ঐ ঘটনার দেড় মাস পার হলেও কোন প্রকার বিচার না পেয়ে মেয়েটি উপজেলা স্কাউটের কমিশনার, মেঘনার পাড় মুক্ত স্কাউটের সভাপতি ও সাবেক মেয়র মাহাফুজুল হকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রায় ২ মাস পার হলেও কোন রুপ ব্যবস্থা গ্রহন করেনি উপজেলা স্কাউট কমিটি।
স্কাউট সংগঠক ও ভূক্তভুগি মেয়েটি বলেন, আমাদের স্কুলে স্কাউটের পি এল কোর্সের জন্য ৫দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানে আমি সেচ্ছাসেবী হিসাবে কাজ করেছি। সেই সময় উপজেলা স্কাউটের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও মেঘনার পাড় মুক্ত স্কাউটের সাধারন সম্পাদক হিতেশ শর্মা স্যার আমাকে তার কাছে যাওয়ার জন্য ডাক দেয়। আমি গেলে স্যার আমার সাথে অশ্লালীল আচরন করেন। পরে আমি দৌড়ে পালি যাই। ঘটনাটি আমি সকালে আমার স্কুল টিচার মহিউদ্দিন স্যারের কাছে বলি। তিনি বিষয়টি পরে দেখবেন বলে আমাকে আশ্বাস প্রদান করেন। স্যারের কোন রুপ ব্যবস্থা গ্রহন না করা আমি উপজেলা স্কাউটের কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। আমার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার আমি বিচার চাই। আমি চাইনা আমার মতন কোন মেয়ের সাথে এই রকম ঘটনা হোক।
গাজীপুর মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মহিউদ্দিন বলেন, ঘটনাটি যখন ঘটেছিল মেয়েটি তখনই আমাকে বলেছে। আমি বিষয়টি স্কুল প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ স্যারকে জানাই। তিনি ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। তিনি কোনে ব্যবস্থা গ্রহন না করায় শিক্ষার্থী আবারও আমার কাছে অভিযোগ করেন। এই ঘটনার বিচার দাবি করেন।
পরে গত ১৯ ফ্রেব্রুয়ারী ফরিদগঞ্জ উপজেলার স্কাউট কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয় ওই শিক্ষার্থী। আমরা চাই এর বিচার হোক। হিতেশ স্যার এই ঘটনা সুদু না আরো অনেক ঘটনা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সুদু সংগঠনের কথা চিন্তা করে আমরা কিছু বলিনা। এবিষয়ে গাজীপুর মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ বলেন, ঘটনাটি আমি গত কয়েক দিন আগে শুনেছি। আমি মেয়েটি ডেকে জিঞ্জাসা করেছি। সে আমার কাছে সকল বিষয় বলেছে। আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাছে বলার জন্য অনেক দিন গিয়েছিলাম কিন্তু স্যারকে পাইনি। এতদিন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থ গ্রহন করেনি এম প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন কথা বলতে পারেনি।
উপজেলা স্কাউট লিডার জিয়া উদ্দিন বলেন, আমি উক্ত অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষক হিসাবে ছিলাম। বিষয়টি আমরা যানি সেই খানে আলোচনা হয়েছে। হিতেশ স্যার র্দীঘদিন ধরে এই কাজ করে আসছে। আমরা কিছু বললে তিনি রেগে যান এবং জেলা কমিটির কাছে অভিযোগ করেন। তাই আমরা ভয়ে কিছু বলিনা। উপজেলা স্কাউট সাবেক সাধারন সম্পাদক, মেঘনার পাড় মুক্ত স্কাউট ও দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারন সম্পাদক হিতেশ শর্মা বলেন, আগামীতে আমি সাধারন সম্পাদক পদে নির্বাচন করবো তাই তারা আমার বিরোদ্ধে সড়যন্ত্র করার জন্য এই কাজ করেছে। আমি ৩০ বছর শিক্ষকতা করেছি কখন কোন খারাপ কাজ করি নাই। এখন বুজি এই কাজ করবো। আমি দুষ্টামি করে ভিবিন্ন সময় ভিবিন্ন কথা বলি শিক্ষার্থীদের আনন্দ দেওয়া জন্য।
ফরিদগঞ্জ স্কাউট কমিটির সাধারন সম্পাদক শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের কমিশনারের কাছে মেয়েটি একটি অভিযোগ করেছে। এ বিষয়টি অত্র স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেছে বসে মিমাংশা করে দিবে।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্কাউট কমিটির কমিশনার, মেঘনার পাড় মুক্ত স্কাউট কমিটির সভাপতি ও সাবেক মেয়র মাহাফুজুল হক বলেন, প্রায় দুই মাস আগে আমার কাছে একটি মেয়ে অভিযোগ করেছে হিতেশ শর্মার বিরুদ্ধে। আমি ঘটনা যানার পর তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি ঘটন করে দিয়েছি। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *