ফরিদগঞ্জ ব্যুরো : একটি হয়রাণিমূলক মিথ্যা মামলার কারণে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া ৮ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বিপন্নের পথে। মামলায় এই ৮ শিক্ষার্থীর বয়স দ্বিগুণেরও বেশী দেখিয়ে তাদের ওই মামলা আসামী করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন শিক্ষার্থী হালনাগাদ ভোটার তালিকা হওয়ার পর ছবি তুলতে এলাকায় আসতে পারছে না। অপর দিকে ৩ জন শিক্ষার্থী অনার্স কাশে পালিয়ে থাকার কারণে ভর্তি হতে বিলম্ভ হচ্ছে। অন্যদিকে বাবা-মা ও পরিবারের স্বজনরা সন্ত্রাসী হামলার আতংকে দিন কাটাচ্ছে। এই ৮ জন শিক্ষার্থীর অপরাধ তারা তাদের দুই শিক্ষাথী বন্ধুর মায়ের সাথে এক ব্যবসায়ীর কর্মচারী অশ্লীল আচরনের প্রতিবাদ করে ছিল। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদগঞ্জ উপজেলার বিরামপুর বাজারে। তাদের অভিভাবকদের দবী মামলা প্রথ্যাহার করে, তাদের সন্তানদের অনার্সে ভর্তি ও ভোটার তালিকায় ছবি তুলার সুযোগ করে দেওয়ার।
ভূক্তভোগি শিক্ষার্থীদের মা ও বাবাদের মধ্যে নেছার আহম্মদ গাজী, হোসেন গাজী, মনির হোসেন, রোওশনারা বেগম ও কহিনুর বেগম জানান, গত ১ অক্টোবর বিকালে, নাঈমের মা সুফিয়া বেগম ও রিয়াজের মা নাছরিন আক্তার, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১২নং চরদু:খিয়া বিরামপুর বাজরের তোফায়েল বেপারীর গামের্টস ও কসমেটিকের দোকানে কেনাকাটা করতে যান। দোকানীর কর্মচারী আব্বাছ হাওলাদার (তোফায়েলের শ্যালক) কোন কারণ ছাড়াই তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার ও অশ্লিল আচরণ করে। এই বিষয়টি তাদের দুই সন্তান জানতে পেরে ওইদিন বিকালে কয়েকজন বন্ধু জিজ্ঞাস করতে গেলে, কথাকাটির এক পর্যায়ে কর্মচারী আব্বাছ তার সহযোগিদের নিয়ে ওই শিক্ষার্থীদের মারধর করে আটকে রাখে। সংবাদ পেয়ে স্থানীয় নেছারের আহম্মেদের ছেলে সালাউদ্দিন মিঠু সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে। কিন্তু পরবর্তীতে দোকানের মালিক তোফায়েল বেপারী তার দোকান ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে এমন অভিযোগ এনে ফরিদগঞ্জ থানায় গত ৩ অক্টোবর বৃহষ্পতিবার রাতে মামলা দায়ের করে। মামলায় আসামী করা হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়–য়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেছার আহাম্মেদের ছেলে সালাউদ্দিন মিঠু(২৪), আঃ মান্নানের ছেলে নাঈম বেপারী ( ১৯) হোসেন বেপারীর ছেলে রাকিব(১৯), টিটু বেপারীর ছেলে রিয়াজ(১৭),মনির গাজী ছেলে মাসুম গাজী(১৮), খোকন বেপারীর ছেলে পবন(১৭), আনিছ গাজীর ছেলে আফসার হোসেন(১৬) , শরিফ গাজীর ছেলে জাফর(১৭)। মামলা হওয়ার পর থেকে তারা পুলিশী ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের মাদের অভিযোগ মামলার ভয়ের পালিয়ে থাকায় তাদের সন্তানদের মধ্যে অনার্সে ভর্তি হতে পারছেনা- রাকিব, মাছুম ও নাঈম এবং চলমান হাল নাগাদ ভোটার তালিকার ছবি তুলতে পারে না- রিয়াদ, রাকিব ও জাফর। এছাড়াও তোফায়েল ও আব্বাস তাদের লোকজন তাদেরকে প্রতিনিয়ত হুমকি প্রদান করছেন। তারা প্রকৃত ঘটনার রহস্য উদঘাটন পূর্বক তাদের সন্তানদের বিপন্ন হতে যাওয়া শিক্ষা জীবন ফিরিয়ে দেয়ার দাবী জানান। এই বিষয়ে তোফায়েল জানান, সে ওই দিন দোকানে ছিল না। তার শ্যালক আব্বাসের সাথে কেনাকাটা নিয়ে ওই দুই ক্রেতার সাথে কি হয়েছে আমি জানি না। কিন্তু ওইদিন বিকালে ও ছেলেদের দলবল এসে তার দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করে। অপর দিকে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও শিক্ষাপতিষ্ঠানের ছাত্র/ছাত্রীরা অভিযোগ করেন, তোফায়েলের দোকানে তারা কিছু ক্রয় করতে গেলে আব্বাস তাদের সাথে খারাপ ও অশ্লিল আচরণ করে যাচ্ছে। রাজনৈতিক প্রভাবে তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলছে না। সন্তানদের অনাগত জীবন বাঁচাতে শিক্ষার্থীদে অভিভাবক মা ও বাবারা গত মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদগঞ্জ প্রেসকাবে সংবাদ সম্মেলন করে এর সুষ্ঠ বিচার দাবী করে। এবিষয়ে, ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুর রকিব জানান, ঘটনাটি নিয়ে মামলা হয়েছে তদন্ত চলছে, এই বিষয়ে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।